জনবল
গ্রাম স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা
ইউনিয়ন পরিষদ
ইউনিয়ন পরিষদের অফিসার ও কর্মচারী:
প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে রয়েছে একজন পূর্ণকালীন ইউনিয়ন সচিব যিনি ডেপুটি কমিশনার বা ডিসি কর্তৃক মনোনীত, একজন দফাদার বা গ্রাম পুলিশ, ৯জন চৌকিদার যারা থানা নির্বাহী অফিসার বা টিএনও কর্তৃক মনোনীত হবেন [স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ ১৯৮৩, ধারা ৪২]
নিম্নে ইউনিয়ন পরিষদের মোট জনবল এবং তাদের সম্মানী বা বেতনের একটি ছক দেওয়া হলো-
নির্বাচিত এবং মনোনীত জনবল | মোট সংখ্যা | মোট বেতন এবং সম্মানী |
চেয়ারম্যান | ১ | ১০৫০.০০ টাকা |
সদস্য(পুরুষ) | ৯ | ৪০০.০০ টাকা |
সদস্য(মহিলা) | ৩ | ৪০০.০০ টাকা |
সচিব | ১ | ১৭৫০.০০ টাকা |
দফাদার বা গ্রাম পুলিশ | ১ | ১০০০.০০ টাকা |
চৌকিদার | ৯ | ৭০০.০০ টাকা |
মোট | ২৪ | ১৪৯০০.০০ টাকা |
সুত্র:আহমেদ, টি(১৯৯৮):স্থানীয় সরকার সংস্কার ভাবনার দুই দশক, পৃষ্ঠা ৩৩
ইউনিয়ন পরিষদের কাজ বা দায়-দায়িত্ব
স্থানীয় মানুষের সমস্যার সমাধানের জন্য স্থানীয় সরকারের ভূমিকা প্রধানত; দু প্রকারের একটি হলো সেবা প্রদানকারী ভুমিকা যেমন রিলিফ বিতরণ, অবকাঠামো নির্মাণ ও বিচার সালিশ করা এবং অপরটি হলো সচেতনায়নকারীর ভূমিকা৷ ১৯৮৩ সালের স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা ও কাজকে প্রধানত ৬ টি ভাগে ভাগ করা যায়৷ যেমন:
পুলিশি ও প্রতিরক্ষা দায়িত্ব;
জননিরাপত্তার জন্য জেলা প্রশাসকের সম্মতি সাপেক্ষে যে কোনও পুলিশি ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে ইউনিয়ন পরিষদ৷ ইউনিয়নের আওতাভুক্ত এলাকার জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচত সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারিন৷ গ্রাম পুলিশের ব্যবস্থা ছাড়াও পুলিশি ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে ইউনিয়ন পরিষদ৷ গ্রাম পুলিশের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সুনির্দিষ্ট করার মধ্য দিয়ে এবং বিধি অনুযায়ী পরিচালনা করা হলে জননিরাপত্তা অনেকটাই নিশ্চত করা সম্ভব (ধারা ৩১)৷
রাজস্ব ও প্রশাসনিক দায়িত্ব:
রাজস্ব ও প্রশাসনিক দায়িত্বের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো;
ক. ইউনিয়নে কর্মরত রাজস্ব আদায়ের কাজে নিয়োজিত সকল সরকারি কর্মচারীকে সহযোগিতা করা;
খ. জেলা প্রশাসক যেভাবে চাইবেন সেভাবে রেকর্ডপত্র প্রণয়ন, জরিপ ও শস্য তদারকি;
গ. কোন অপরাধ সংঘটিত হলে এবং ইউনিয়নে কোনও দুষ্কৃতিকারীর উপস্থিতি দেখা গেলে তা পুলিশকে জানানো এবং অপরাধের তদন্ত ও অপরাধীদের গ্রেফতারের জন্য সহযোগিতা করা;
ঘ. কোন সরকারি সম্পত্তি বেদখল, ক্ষতিগ্রস্থ হলে দ্রুত তা কর্তৃপক্ষকে জানানো;
ঙ. সরকার বা অন্যান্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে প্রচারমূলক কাজে সাহায্য করা;
চ. সরকারি কর্মকর্তাদেরকে তাদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করা৷ তবে কোন কর্মকর্তার কাজে হস্তক্ষেপ বা ব্যাঘাত সৃষ্টি করা যাবে না(ধারা৩২)৷
৩.উন্নয়নমুলক দায়িত্ব:
ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু৷ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে ইউনিয়ন পরিষদের রয়েছে ব্যাপক ক্ষমতা৷ প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদ তার ইউনিয়নের কৃষি, শিল্প, সমাজ উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করবে (ধারা ৩৩)৷
৪.হস্তান্তরিত দায়িত্ব:
বিধিমালা অনুযায়ী সরকার যে কোন সময় ইউনিয়ন পরিষদকে যে কোন দায়িত্ব প্রদান করতে পারে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোনও দায়িত্ব সরকার প্রত্যাহার করে নিতে পারে (ধারা ৩৫)৷
৫.আদালত বা বিচার সংক্রান্ত দায়িত্ব:
পদাধিকারবলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গ্রাম আদালতের প্রধান হিসেবে বিভিন্ন দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা-মোকদ্দমার নিষ্পত্তি করেন৷ ফলে জনসাধারণ থানা ও জেলা আদালতে মামলা পরিচালনার বিভিন্ন অসুবিধা থেকে রেহাই পান৷ ১৯৭৬ সালের গ্রাম আদালত অধ্যাদেশ তফসিলে (প্রথম খন্ডে ফৌজদারী মামলা ও দ্বিতীয় খন্ডে দেওয়ানী মামলা) গ্রাম আদালতে বিচারযোগ্য মামলাসমূহের ঊল্লেখ রয়েছে৷ এছাড়া চেয়ারম্যানের পাশাপাশি মেম্বাররাও ছোট ছোট ঝগড়া বিবাদ ও জমিজমা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে ব্যক্তিগত উদ্যেগে সালিশের মাধ্যমে নিস্পত্তি করে থাকেন৷
৬.নাগরিক দায়িত্ব:
ইউনিয়ন পরিষদের প্রধানত প্রথম তফসিলের ১ম অংশে উল্লিখিত ৩৮টি কাজ করে থাকেন যা ঐচ্ছিক কাজ এবং ১০ টি আবশ্যিক কাজ করে থাকেন (ধারা ৩০)৷
ইউনিয়ন পরিষদের ১০টি আবশ্যিক কাজ
ইউনিয়ন পরিষদের ৩৮টি সাধারণ বা ঐচ্ছিক কার্যাবলী
১. জনপথ ও রাজপথের ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ;
২. সরকারি স্থান, উম্মুক্ত জায়গা, উদ্যান ও খেলার মাঠ এর ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ;
3.জনপথ, রাজপথ ও সরকারি স্থানে আলো জ্বালানো;
4. সাধারণভাবে গাছ লাগানো ও সংরক্ষণ এবং বিশেষভাবে জনপথ ও রাজপথ ও সরকারি জায়গায় গাছ লাগানো এবং সংরক্ষণ;
৫. কবরস্থান, শ্মশান, জনসাধারণের সভার স্থান ও জনসাধারণের অন্যান্য সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা;
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS